আসিয়ান প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্মেলনে অভূতপূর্ব সাড়া

আসিয়ান প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্মেলনে অভূতপূর্ব সাড়া
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে (MITEC) গত ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী আসিয়ানের প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্মেলন অভূতপূর্ব সাফল্য ও অংশগ্রহণের নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে। মালয়েশিয়ার আসিয়ান চেয়ারম্যানশিপ ২০২৫-এর অংশ হিসেবে আয়োজিত এই সম্মেলনকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী আঞ্চলিক প্রযুক্তি সহযোগিতা মঞ্চ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী দাতুক আমার হাজি ফাদিল্লাহ হাজি ইউসুফ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী দশকের আঞ্চলিক রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি হবে প্রযুক্তি, মানবসম্পদ এবং আঞ্চলিক ঐক্য।
এসময় উপপ্রধানমন্ত্রী গবেষণায় তহবিল বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক উদ্ভাবকদের আকৃষ্ট করা এবং মালয়েশিয়াকে আঞ্চলিক বিজ্ঞান সহযোগিতার কেন্দ্রে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে দীর্ঘমেয়াদি উদ্ভাবন-অংশীদারিত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এই সম্মেলন এখন থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হবে।

এই সম্মেলনে ২,০০০ জনেরও বেশি অনসাইট প্রতিনিধি ছিল, যা অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছুঁয়েছে। এছাড়াও অনলাইনে লাইভস্ট্রিম দর্শক ছিল ৫০,০০০ এরও বেশি।
১৩টি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি এবং চল্লিশেরও বেশি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী, শিল্পনেতা, বিজ্ঞানী ও নীতিনির্ধারকের উপস্থিতি এই মঞ্চের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্বকে তুলে ধরে।

সম্মেলন চেয়ারপারসন ও সি-ই-এ এর সিইও রাভেনা চেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আসিয়ানের বিশাল জনসংখ্যা, জনমিতিক সুবিধা এবং দ্রুত বিস্তৃত হওয়া ডিজিটাল অর্থনীতির সমন্বয়ে এই অঞ্চল বৈশ্বিক উদ্ভাবনের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
তিনি সীমান্ত পারাপারের গবেষণা সহযোগিতা, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দক্ষ জনশক্তি বিনিময়ের ওপর জোর দেন। তার মতে, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের এই যুগে ভবিষ্যৎ হবে “সহ-সৃষ্ট ও ভাগাভাগি করা।“

এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক অ্যান্টোনিও আই. বাসিলিও আসিয়ানের সঙ্গে বৈশ্বিক জিডিপির ৬০ শতাংশের বেশি ধারণকারী এপেক অঞ্চলের পারস্পরিক নির্ভরতা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার বিকাশমান সেমিকন্ডাক্টর শিল্প এবং অগ্রসরমান ডিজিটাল নীতির কারণে দেশটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শাসনব্যবস্থা, ডিজিটাল বাণিজ্য, টেকসই সরবরাহ শৃঙ্খল এবং সীমান্ত-পার গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে কৌশলগত খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছে।
এসময় তিনি আসিয়ান ও এপেকের সম্মিলিত উদ্যোগে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।


সম্মেলনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ উন্মোচন করা হয়, যার মধ্যে ছিল কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সামিট টোয়েন্টি টোয়েন্টি-ফাইভের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং “এশিয়ান ইকোনমিক” শীর্ষক নতুন প্রকাশনার উন্মোচন।
এছাড়া ইনট্রিনসিক সি-এ-আ এর সঙ্গে সাই-এ-এফ, এ-আই-এস-ই-ডি এবং মাইমস-এর মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি (MOU) স্বাক্ষরিত হয়, যা মালয়েশিয়াকে আসিয়ান উদ্ভাবন ইকোসিস্টেমের সংযোগস্থলে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করবে।

২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপ, বৈজ্ঞানিক সেশন, শিল্প ফোরাম ও উদ্ভাবন প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচ্য প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- ভবিষ্যৎ গতিশীলতা, ডিজিটাল ও প্রিসিশন স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই ভবন প্রযুক্তি, হালাল ডিজিটাল অর্থনীতি, শিক্ষা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন। ইনট্রিনসিক পিচ ২০২৫-এ উদীয়মান স্টার্টআপ ও আঞ্চলিক ভেঞ্চার বিনিয়োগকারীরা তাদের উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপন করেন।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ