পিরোজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৫

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পিরোজপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের মধ্যে হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মো. ইমরান শেখ (২৩), শাহনেওয়াজ অভি (২৬) এবং মো. মুঈন উদ্দিন (২৭) এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি (২৯) ও তার ভাই সানজিদ (১৯) রয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মুঈন উদ্দিন জানান, ‘সাধারণত আমরা তারাবির নামাজ শেষে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে চা খেতে আসি। আজ হঠাৎ সানি এসে অভিকে বাজে কথা বলে। একপর্যায়ে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সানি অভিযোগ করেন, ‘হামলাকারীরা প্রথমে আমাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। যখন আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করি, তখন আমার ভাই সানজিদকেও মারধর করা হয়।’ এ হামলায় সানির পিঠ ও হাতে এবং সানজিদের গলা ও পায়ে আঘাত লেগেছে।
শাহনেওয়াজ অভি বলেন, ‘মুসাব্বির মোহম্মদ সানি জুলাই বিপ্লবের সময় কোনো আন্দোলনে অংশ নেয়নি। ফেসবুকে কোনো পোস্টও দেয়নি। বরং তৎকালীন পিরোজপুরের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী রেজাউল করিমের সঙ্গে মিশে আমাদের তথ্য পাচার করেছে। ৫ আগস্টের পর আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি। তারা নিজেরাই সমন্বয়ক কমিটি তৈরি করে পিরোজপুরে চাঁদাবাজি শুরু করে। আমরা বাধা দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে থাকতে না পেরে সানি ঢাকায় গিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ সানি এসে আমাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এর আগেও ১৭ সেপ্টেম্বর শিল্পকলায় সে হামলা চালায়। সেখানে হান্নান মাসুদ ও রিয়ান ভাই উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই আমাদের ছোট ভাই ইমরানের ওপর হামলা করে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সানি তারাবির নামাজ শেষে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পর পাঁচ-সাতজনের একটি সশস্ত্র দল লোহার পাইপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আকস্মিক হামলা চালায়।
হামলার খবর পেয়ে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রাজীব পাইক জানান, ‘আহতদের মধ্যে সানির আঘাতের পরিমাণ বেশি। এক্স-রে রিপোর্টের মাধ্যমে তার আঘাতের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস সোবাহান জানান, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতা ও সমাজের বিশিষ্টজনেরা এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।