ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪ লাখ, মৃত ৫০০

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪ লাখ, মৃত ৫০০
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১৪ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, মালাক্কা প্রণালীতে সৃষ্ট বিরল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত সপ্তাহে আচেহ, উত্তর সুমাত্রা ও পশ্চিম সুমাত্রা, এই তিনটি প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫০০–র বেশি, আর অন্তত ৫০০ মানুষ এখনো নিখোঁজ আছে। কয়েক হাজার মানুষ আহত এবং বহু এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ফলে উদ্ধার তৎপরতা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পায়ে হেঁটে বা মোটরসাইকেলে করে দুর্গতদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন, কারণ অনেক সড়ক কাদা ও আবর্জনায় বন্ধ হয়ে গেছে। আচেহ প্রদেশের বাসিন্দারা জানান, বন্যার পানির স্রোত সুনামির মতো মনে হয়েছে। স্থানীয় এক অধিবাসী আমালিয়া জানান, তার দাদিও জীবনে এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি কখনও দেখেননি। অন্যদিকে পশ্চিম সুমাত্রায় টুইন ব্রিজ এলাকায় নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছেন বহু মানুষ। তাদের মতে, সময় যত গড়াচ্ছে, প্রিয়জনদের জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা তত ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে।

উত্তর সুমাত্রার মধ্য তাপানুলি এলাকায় খাদ্যসংকট আরও তীব্র হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খাদ্যসহায়তা না পাওয়ায় ইনস্ট্যান্ট নুডুলস নিয়েও মারামারির ঘটনা ঘটছে। অনেককেই বিশুদ্ধ পানি বা ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার জন্য কয়েক কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে। মধ্য আচেহ এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা সচল রাখতে কর্তৃপক্ষ স্টারলিংক ডিভাইস সরবরাহ করেছে, যার সামনে মোবাইল চার্জ দেওয়া ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দুর্গতদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

এদিকে বন্যা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা, খাদ্য সাহায্য বিতরণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ধীরগতি মানুষের অসন্তোষ বাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করে স্বীকার করেছেন যে অনেক সড়ক এখনো বিচ্ছিন্ন। তিনি দাবি করেন, সংকট মোকাবিলায় সরকারের সব সক্ষমতা ব্যবহার করা হচ্ছে এবং জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জরুরি।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ একই সময়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের মুখোমুখি হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ১১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ৩৫৫ এবং থাইল্যান্ডে ১৭৬ জন নিহত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের অস্বাভাবিক বর্ষণ একক কোনো কারণের ফল নয়; উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু, একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের পথ পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মিলিয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ