চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে টিনঘরেই মদের কারখানা, বন্যপ্রাণী শিকারের সরঞ্জামসহ আটক ১
- Author, চবি প্রতিনিধি
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ মদের কারখানায় অভিযান, বন্যপ্রাণী শিকার-অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে একজন আটক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদসংলগ্ন গ্রীনহাউস এলাকার একটি টিনের ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বাংলা মদ ও বন্যপ্রাণী শিকারের সরঞ্জামসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রক্টর ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কাননের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে সুমন চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার সঙ্গে থাকা এক নারীকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, সুমন চাকমা প্রায় ১৫ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিজ নেওয়া বখতিয়ার ফকিরের জমিতে বসবাস করে আসছিলেন এবং গোয়ালঘরের পেছনে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মদ তৈরির কারখানা পরিচালনা করছিলেন।
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানান, পুকুরপাড় এলাকায় বহিরাগতদের অস্বাভাবিক আনাগোনা এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীর নিয়মিত উপস্থিতির কারণে নিরাপত্তাকর্মীদের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। কয়েক দফা রেকি ও গোপন নজরদারির পর সোমবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে নিরাপত্তা সুপারভাইজার নুরুদ্দীন-মহিউদ্দিনসহ একটি টিম ঘরটি ঘিরে ফেলে। পরে অভিযানে প্রায় ৩০ লিটার সদ্য প্রস্তুত মদ, ৫ লিটার ডেক্সি, ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত বোতল ও মদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি মদ বিক্রির হিসাব সংবলিত একটি নোটবুকও জব্দ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজকৃত জমিতে অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট লিজগ্রহীতার বিরুদ্ধে লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান সহকারী প্রক্টর। এছাড়া অনুমতিহীনভাবে গাছ কাটার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা আরোপ করা হবে।
সুমন চাকমার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গল থেকে বন্য শুকর, হরিণ ও বন্য মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণী শিকার করতেন এবং এসব মাংস বিক্রি করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীও নিয়মিত তার কাছ থেকে মদ কিনতেন বলে জানা গেছে। নিয়মিত ওই এলাকায় যাতায়াতকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে।
অভিযানে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনস্পেক্টর মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশ দল সহযোগিতা করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী হত্যা এবং অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সুমন চাকমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।