মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ‘জাদুর কাঠি’ নয়ঃ বাণিজ্য উপদেষ্টা

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ‘জাদুর কাঠি’ নয়ঃ বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশা রাখতে সতর্ক করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এফটিএ কোনো 'জাদুর কাঠি বা মহৌষধ' নয় এবং এটি সব সমস্যার সমাধান করবে বলে ধারণা করা ভুল।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) প্রথম আলো-এর আয়োজনে 'রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন, দেশের অর্থনীতিতে এফটিএ-এর প্রভাব কতটা জটিল হতে পারে। তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের বেপারে বলেন "চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আমদানিনির্ভর। এই লেনদেন থেকে ২০–২২ হাজার কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ রাজস্ব তৈরি হয়। চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পাই। এফটিএ করলে আমরা হারব, আমরা জিততে পারব না।"

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যখন কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে যায়, তখন শুধু চুক্তির দিকে নয়, বরং "আমাদের কী পণ্য বিদেশে যাবে এবং কী ছাড় দেওয়া হবে" এই জটিল হিসাবের বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হয়।

গোলটেবিলে বাণিজ্য উপদেষ্টা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের একটি চিত্র তুলে ধরেন। তিনি খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "গত ১৬ বছরের দুর্বৃত্তায়নে অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ হয়েছে, যা বহু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও নেই।"

তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন ১২ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল, যার মধ্যে ছয় বিলিয়ন ডলার ছিল অপরিশোধিত। বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, "এখন তিন-চার মাসের রিজার্ভ আছে।"

উপদেষ্টা যোগ করেন, বর্তমানে সহজ ব্যবসা (Ease of Doing Business) এবং ব্যবসার পরিচালন ব্যয় এই দুটি বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ব্যবসা ভালো করার জন্য বিদ্যমান নানা সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান করতে হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী সদস্য নাহিয়ান রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, বার্জার পেইন্টস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী, রেনাটার এমডি সৈয়দ এস কায়সার কবির, এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মাহবুব উর রহমান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়েমা হক বিদিশা, এলএফএমইএবি-এর সহসভাপতি মো. নাসির খান, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. শাহজাহান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সামিম আহমেদ-সহ দেশের ব্যবসা ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ