জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের ঢাকা সফর
রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক সহায়তার ওপর বিশেষ নজর

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টায় ঢাকায় পদার্পণ করেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। এই সফরটি, যা প্রায় সাত বছরের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং বৃহত্তর মানবিক সহায়তার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
সফরের প্রথম দিন, শুক্রবার (১৪ মার্চ), মহাসচিব তার আবাসস্থলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু এবং অন্যান্য অগ্রাধিকারমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এরপর, তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠকে মিলিত হবেন।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন এই সফরের অন্যতম মুখ্য অংশ। মহাসচিব গুতেরেস প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন, যেখানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাদের অভ্যর্থনা জানাবেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের তথ্য অনুসারে, গুতেরেস উখিয়া শরণার্থী শিবিরে পৌঁছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হবেন। তিনি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন।
কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি, গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে গণইফতারে অংশ নেবেন, যা তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশের একটি শক্তিশালী প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) এই সফরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকবে এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা সেনাবাহিনী তত্ত্বাবধান করবে।
ঢাকায় ফিরে, মহাসচিব জাতিসংঘের কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও গুতেরেস একটি যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেবেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার সম্মানে একটি ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন। গুতেরেস রোববার সকালে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এই সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এটি রমজানের সংহতি প্রদর্শনের একটি সুযোগ। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।