গুপ্ত হা’মলায় পলাতক শক্তির আরও কঠিন পরিকল্পনা আছে প্রধান উপদেষ্টা
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার প্রসঙ্গ তুলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পরাজিত ও পলাতক শক্তি বুঝে গেছে-তরুণ প্রজন্মই তাদের ফিরে আসার পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। সে কারণেই নির্বাচনের আগমুহূর্তে সহিংসতা ও গোপন হামলার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চলছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, নির্বাচন সম্পন্ন হলে পলাতক শক্তির সহযোগীরা আর সমর্থন জোগাতে পারবে না-এই আশঙ্কা থেকেই তারা ভোটের আগেই পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে। চোরাগোপ্তা হত্যার চেষ্টা সেই পরিকল্পনারই একটি দিক, তবে তাদের হাতে আরও কঠোর ও জটিল ছক রয়েছে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
বিটিভি, বেতার ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ওই ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাটি কোনো একক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়; এটি বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও গণতান্ত্রিক যাত্রার ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি জানান, হাদি বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাঁর চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন এবং দেশবাসীকে তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।
ঘটনাটিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা যেখানেই থাকুক, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না-এমন আশ্বাসও দেন তিনি।
ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, পরাজিত ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী শক্তির সব অপচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। ভয়ভীতি, সহিংসতা বা রক্তপাতের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না বলে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে জানান। একই সঙ্গে জনগণকে সংযম বজায় রাখার, গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মাধ্যমেই অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টাকে নস্যাৎ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তরুণদের সুরক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তারা জানে-ভীতিহীন ও স্বার্থহীন তরুণরাই তাদের পুনরুত্থানের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। তাই নির্বাচন আসার আগেই তারা এই বাধাগুলো সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি দেশবাসীকে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে তরুণদের রক্ষা করার আহ্বান জানান।
ভাষণের শেষাংশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। পুরোনো দাসত্বের মানসিকতা পরিহার করে সবাইকে গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ দেশের পবিত্র মাটিতে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির আর কোনো প্রত্যাবর্তন ঘটবে না।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।