চবি তে খাবারের খোঁজে নামা বন্য শূকরের ওপর শিকারিদের আক্রমণ

চবি তে খাবারের খোঁজে নামা বন্য শূকরের ওপর শিকারিদের আক্রমণ
  • Author, চবি প্রতিনিধি
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্য শূকর শিকারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বাঁশের সঙ্গে তীক্ষ্ণ লোহার রড বেঁধে শিকারিরা একটি বন্য শূকরকে আঘাত করে হত্যাচেষ্টা চালায়।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী শ্যামল বড়ুয়া জানান, রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি আলাওল হলের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে এসে হলের বিপরীত পাশের পাহাড়ি এলাকায় কলাবাগানের দিকে হইচই লক্ষ্য করেন। তিনি সেখানে গিয়ে শিকারিদের খোঁজার চেষ্টা করলেও কাউকে পাননি। পরে দেখতে পান, একটি বন্য শূকরের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজারকে অবহিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের সুপারভাইজার রেজাউল করিম বলেন, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁশের মাথায় ধনুকের মতো করে বাঁধা ধারালো লোহার রড উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই অস্ত্র দিয়েই শূকরটিকে আঘাত করা হয়েছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানানো হয়। পরে এক শিক্ষার্থী আহত শূকরটিকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেন।

শূকরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী জনি রায় বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি দেখেন শূকরটির শরীর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তারা সীমিতভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তবে শূকরটি বাঁচবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পশু-প্রাণীদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় কার্যকর সহায়তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পশু-প্রাণীর বৈচিত্র্য অনেক বেশি হওয়ায় এসব প্রাণীর জন্য আলাদা শেল্টার হাউস ও ব্যবস্থাপনা জরুরি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে টহল দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কারা এই শিকারের চেষ্টা করেছে, তা শনাক্তে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করা হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি পাহাড়ি পরিবেশে অবস্থিত হওয়ায় ক্যাম্পাসে নিয়মিত বিভিন্ন বন্য প্রাণীর আনাগোনা দেখা যায়। সন্ধ্যার পর প্রায়ই বন্য শূকরের দল ক্যাম্পাসে নেমে আসে, যারা মানুষ বা আলো দেখলেই পাহাড়ি জঙ্গল কিংবা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায়। মূলত খাবারের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে এসে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে ময়লার ভাগাড়গুলোতে ঘোরাফেরা করে। এ প্রেক্ষাপটে বন্য প্রাণীদের সুরক্ষা ও মানবিক সহাবস্থার বিষয়টি নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ