পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংস্কারে ১২ দফা প্রস্তাব

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংস্কারে ১২ দফা প্রস্তাব
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াকে সহজ, সাশ্রয়ী ও শিক্ষার্থী-বান্ধব করতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষাসহ ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, প্রতিবছর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আর্থিক চাপ, বারবার পরীক্ষা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না।

তাদের মতে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা ফি দিয়ে আবেদন করার সক্ষমতা অনেক শিক্ষার্থীর নেই। প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সব ইউনিটে আবেদন ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়াও বাস্তবসম্মত নয়। অথচ এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি কার্যক্রম একক ফরম ও একবারের ফিতে দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে-যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অনুসরণযোগ্য।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান ও বিভাগ পরিবর্তনকারী একজন শিক্ষার্থীকে ১২ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গড়ে ২৪ থেকে ২৬ বার ভর্তি পরীক্ষায় বসতে হতে পারে-এমন বাস্তবতা তুলে ধরে তারা জানান, এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক চাপ বাড়ে। পাশাপাশি অভিভাবকদের আবেদন ফি বাবদ ২৫-৩০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়; এর সঙ্গে যুক্ত হয় যাতায়াত, কোচিং ও আবাসন খরচ। কোনো শিক্ষার্থী এক বছর পিছিয়ে গেলে তার দায়ভার কার-এই প্রশ্নও তোলা হয়।
এসব সমস্যা সমাধানে জনমত গঠনের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তারা সরকারের বিবেচনার জন্য ১২ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

  1. একবারের সরকারি আবেদনেই যোগ্যতা অনুযায়ী ৫৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ
  2. কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা
  3. ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি বন্ধ
  4. একাধিকবার ফি আদায় না করে সর্বোচ্চ দুই-তিন ধাপে ভর্তি পরীক্ষা
  5. এইচএসসি ফল প্রকাশের ৬০ দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি ও ৯০ দিনের মধ্যে একযোগে পরীক্ষা আয়োজন
  6. ২০০ নম্বরের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জিপিএসহ ৩০০ নম্বরের জাতীয় মেধাতালিকা প্রণয়ন
  7. আবেদন, ভর্তি ও মাইগ্রেশন ফি আলাদা কোডে একবার করে গ্রহণ
  8. ফল প্রকাশের ৩-৫ মাসের মধ্যে ক্লাস শুরু করে সেশনজট নিরসন
  9. সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা একই সময়ে সম্পন্ন
  10. প্রতিবছর ৫৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ ও শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ভর্তি ব্যবস্থাপনা
  11. আবেদন ও মাইগ্রেশন ফি ন্যায্য বণ্টন
  12. স্বচ্ছ কেপিআই পদ্ধতিতে ভর্তি শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ
এ ছাড়া সমাধান হিসেবে একটি সমন্বিত রোডম্যাপ প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে একক আবেদন, জাতীয় মেধাতালিকা, পছন্দক্রমভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ নির্বাচন, স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনা এবং সময়মতো ভর্তি ও ক্লাস শুরুর বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্যোক্তারা জানান, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা বা দূরত্বের কারণে কেউ উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে না। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সেশনজট ছাড়াই কাঙ্ক্ষিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ