আগস্টের আন্দোলনে আমরা যে শহিদ হইনাই, এটা আমাদের জীবনের অতিরিক্ত সময় : চাকসু ভিপি
- Author, চবি প্রতিনিধি
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
-
আগস্টের আন্দোলনে শহিদ না হওয়াটাকেই নিজেদের জীবনের অতিরিক্ত সময় হিসেবে উল্লেখ করে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (চাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) ইব্রাহিম হোসেন রনি। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাদ জুমা চাকসুর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্মুখ সারির জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। পরে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি স্মরণ চত্বরে (জিরো পয়েন্ট) এসে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমরা সবাই হাদি হবো, গুলির মুখে কথা কবো’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, হাদি হত্যার বিচার চাই’, ‘গোলামি না আজাদি—আজাদি আজাদি’, ‘ফ্যাসিবাদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তব্যে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর দেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। আমরা কারো কাছে রাষ্ট্র বিক্রি করতে চাই না। কিন্তু ওসমান হাদি ভাইয়ের শাহাদাতের পর দেখা যাচ্ছে, কিছু মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় উসকানি দিয়ে দেশকে আবার ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। চাকসুর পক্ষ থেকে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জুলাইবিরোধীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়াতেই আজ জুলাই যোদ্ধাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের আন্দোলনে আমরা যে শহিদ হইনাই, সেটাই আমাদের জীবনের অতিরিক্ত সময়। নিরাপদ ক্যাম্পাস ও নিরাপদ রাষ্ট্র গড়তে প্রয়োজনে আমরা আমাদের কলিজা দিতেও প্রস্তুত।’
এসময় বিজয় ২৪ হল সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নদী বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যা করার মাধ্যমে কেবল একজন মানুষকে নয়, পুরো জুলাইকেই হত্যা করা হয়েছে। ২৪-এর বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা চাকসু পেয়েছি বা ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছি—এই ধারণা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। হাদি ভাইকে হত্যার মাধ্যমে জুলাইকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। খুনিরা যেখানেই থাকুক, তাদের ধরে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমাদের ক্ষোভ থামবে না।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেদিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আনা হবে বলে জানা গেছে। আগামীকাল রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।