ইইউর সাবেক কমিশনারসহ ৫ জনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের
- Author, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
-
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনের অভিযোগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক এক শীর্ষ কমিশনারসহ পাঁচজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে নির্দিষ্ট মতাদর্শ দমনে চাপ দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রযুক্তিবিষয়ক সাবেক শীর্ষ নিয়ন্ত্রক থিয়েরি ব্রেটন। এই সিদ্ধান্তকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি হিসেবে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও বলেন, কিছু উগ্রপন্থী কর্মী ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বেসরকারি সংস্থা বিদেশি শক্তির হয়ে সেন্সরশিপ কার্যক্রম চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিগুলো। এ প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্ট থিয়েরি ব্রেটনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (ডিএসএ)-এর ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে, ডিএসএ আইনের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে কনটেন্ট যাচাই ও নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে ডানপন্থী মতাদর্শকে পরিকল্পিতভাবে দমন করার চেষ্টা চলছে। তবে ব্রাসেলস এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগেও থিয়েরি ব্রেটনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক–এর প্রকাশ্য বিরোধ দেখা গেছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশন ডিএসএ লঙ্ঘনের অভিযোগে এক্সকে ১২ কোটি ইউরো জরিমানা করে, যা এই আইনের আওতায় প্রথম বড় শাস্তি। কমিশনের অভিযোগ ছিল, এক্সের ‘ব্লু টিক’ ব্যবস্থা ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এক্স ইউরোপীয় কমিশনের বিজ্ঞাপন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
ভিসা নিষেধাজ্ঞার জবাবে থিয়েরি ব্রেটন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, “আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের বলছি, সেন্সরশিপ আপনি যেখানে ভাবছেন, সেখানে নেই।”
ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও রয়েছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গ্লোবাল ডিসইনফরমেশন ইনডেক্স (জিডিআই)-এর প্রধান ক্লেয়ার মেলফোর্ড। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডারসেক্রেটারি সারা বি রজার্স অভিযোগ করেন, জিডিআই মার্কিন করদাতাদের অর্থ ব্যবহার করে আমেরিকান গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশ দমনে ভূমিকা রেখেছে।
এ ছাড়া অনলাইন ঘৃণা ও ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইট (সিসিডিএইচ)-এর প্রধান ইমরান আহমেদ এবং জার্মান সংগঠন হেটএইড–এর দুই কর্মকর্তা আনা-লেনা ভন হোডেনবার্গ ও জোসেফিন বালোঁর ওপরও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব সংস্থা ডিএসএ বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।
জিডিআইয়ের এক মুখপাত্র বিবিসি–কে বলেন, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাকস্বাধীনতার ওপর কর্তৃত্ববাদী আক্রমণের শামিল এবং এটি সরকারের পক্ষ থেকে চরম সেন্সরশিপের উদাহরণ।
সূত্র: বিবিসি
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।