অর্থপাচার-ক্ষমতা অপব্যবহার মোট ২৫ টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত নাজিব রাজাক
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
-
মালয়শিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে ‘১এমডিবি’ কেলেঙ্কারি তে আরো ২৫টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের ৪ টি অভিযোগ এবং অর্থ পাচারের ২১টি অভিযোগে দোষী নাজিব রাজাক।
আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করেছে।
বিচারক কলিন লরেন্স সিকুয়েরাহ দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে পাঠ করা রায়ে নাজিব রাজাকের আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিগুলো নাকচ করে দেন।
নাজিবের দাবি ছিল এই মামলাগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে বিচারক স্পষ্ট ভাষায় জানান "আসামির এই যুক্তি ঠান্ডা, কঠিন এবং অকাট্য প্রমাণের সামনে টেকেনি। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, আসামি ১এমডিবি উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শক্তিশালী অবস্থানের অপব্যবহার করেছেন।"
অর্থ পাচারের বিবরণ আদালতে প্রসিকিউটররা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিল (১এমডিবি) থেকে ২.২ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ৫৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অবৈধভাবে নাজিব রাজাকের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
বিচারক উল্লেখ করেন, নাজিব এই বিপুল অর্থের উৎস যাচাই করার কোনো পদক্ষেপ নেননি, বরং নিজের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে তা ব্যবহার করেছেন।
আদালত দোষী সাব্যস্ত করলেও নাজিবের চূড়ান্ত সাজার মেয়াদ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে অন্য একটি মামলায় (এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল) নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে কমিয়ে ৬ বছর করা হয়। বর্তমান রায়ের ফলে তার কারাবাসের মেয়াদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী নাজিবের ক্ষমতার অপব্যবহারের সাজা হিসেবে প্রতিটি অভিযোগের জন্য সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অর্থপাচারের প্রতিটি অভিযোগে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল এবং আত্মসাৎকৃত অর্থের পাঁচ গুণ জরিমানা হতে পারে।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ‘ঐক্য সরকার’ -এর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। কেননা নাজিবের দল ইউএমএনও (UMNO) বর্তমান জোট সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দলের একটি অংশ ইতিমধ্যেই জোট থেকে সরে আসার দাবি জানাচ্ছে।
বিখ্যাত বিশ্লেষক জেমস চাই-এর মতে, এই সাজা ইউএমএনও-র তৃণমূল পর্যায়ে অসন্তোষ তৈরি করতে পারে, যা সরকারের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
বর্তমানে ৭২ বছর বয়সী নাজিব রাজাক কুয়ালালামপুরের কাজাং কারাগারে তার আগের সাজা ভোগ করছেন। তার আইনজীবীরা আজকের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।