মার্কিন প্রেসিডেন্টের কৌশলে নিরাপত্তা বলয়: তারেক রহমানের গাড়িবহরে দেখতে প্রায় একই দুই গাড়ি

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কৌশলে নিরাপত্তা বলয়: তারেক রহমানের গাড়িবহরে দেখতে প্রায় একই দুই গাড়ি
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান–এর চলাচলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে একটি সুপরিকল্পিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক সময়ে তার গাড়িবহরে দেখতে অত্যন্ত মিল রয়েছে এমন দুইটি এসইউভি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বহরে ব্যবহৃত ডিকয় নিরাপত্তা কৌশলের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চলাচলের সময় একই ধরনের একাধিক গাড়ি ব্যবহার করা হয়, যেগুলোর বাহ্যিক গঠন প্রায় একরকম থাকে। এতে করে কোন গাড়িতে মূল ব্যক্তিটি রয়েছেন, তা নির্দিষ্ট করে শনাক্ত করা কঠিন হয়। তারেক রহমানের বহরেও এমনই একটি কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও গাড়িগুলো প্রযুক্তিগতভাবে বা কাঠামোগতভাবে সম্পূর্ণ এক কি না, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সম্প্রতি Toyota Land Cruiser Prado LC 250 (হার্ডটপ) মডেলের একটি এসইউভি বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (BRTA) সূত্রে জানা গেছে, গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস অনুমোদন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

জাপানে চলতি বছর উৎপাদিত এই সাদা রঙের, সাত আসনের গাড়িটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের Velos Automotive Exporting LLC থেকে আমদানি করে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক Asian Imports Limited। ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে গাড়িটি। পরে তেজগাঁও গুলশান লিংক রোডের শোরুমে এটি দেখা গেলেও, সংশ্লিষ্টরা এর ব্যবহারকারী সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।

BRTA–র নথি অনুযায়ী, গাড়িটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (BNP)–এর নামে নিবন্ধিত, যেখানে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৬-৬৫২৮।

গাড়িটির ইঞ্জিন ক্ষমতা ২,৮০০ সিসি, কার্ব ওজন ২,৭৯০ কেজি এবং গ্রস ওজন ৩,০৮৫ কেজি। ঘোষিত ক্রয়মূল্য ছিল ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার। শুল্ক ও কর মিলিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। BRTA ডিসেম্বর ২০২৯ পর্যন্ত গাড়িটির ফিটনেস অনুমোদন দিয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনকালীন নিরাপত্তার জন্য বিএনপিকে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমোদন দিয়েছিল, একটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য এবং আরেকটি তারেক রহমানের জন্য।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সহিংসতার অভিযোগ এবং বিশেষ করে শহীদ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনা নিরাপত্তা ঝুঁকিকে আরও স্পষ্ট করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের লক্ষ্যভিত্তিক হামলার নজির বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে।

সব মিলিয়ে, তারেক রহমানের গাড়িবহরে দেখতে প্রায় অভিন্ন একাধিক গাড়ির ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আদলে নেওয়া একটি সম্ভাব্য ডিকয় নিরাপত্তা কৌশল হিসেবেই আলোচিত হচ্ছে। যদিও গাড়িগুলো প্রযুক্তিগতভাবে এক কি না, তা স্পষ্ট নয়, তবে বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবতায় এমন ব্যবস্থা গ্রহণকে নিরাপত্তা জোরদারের একটি সচেতন ও কৌশলগত পদক্ষেপ বলেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ