যুদ্ধবিরতির পথে ইসরাইল: নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় চুক্তি অনুমোদিত!

যুদ্ধবিরতির পথে ইসরাইল: নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় চুক্তি অনুমোদিত!
ছবির ক্যাপশান, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে বৈঠকে বসে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। ছবি: সংগৃহীত
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভোটাভুটির মাধ্যমে এই চুক্তি অনুমোদিত হয়। আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সমস্ত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে বলে প্রতীয়মান হওয়ায় নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন করেছে।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মন্ত্রিসভা ‘সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদনের’ সুপারিশ করেছে। চুক্তিটি এখন আলোচনা ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য পূর্ণ মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পর পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গাজায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। কাতারি ও মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

হামাস প্রায় সঙ্গে সঙ্গে চুক্তিটি অনুমোদন করলেও ইসরাইল এতে বিলম্ব করে। চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে ‘শেষ মুহূর্তে সংকট’ তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করে বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য শুক্রবার বিকেলে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গত দুই দিনে গাজাজুড়ে অন্তত ১১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২৮ জন শিশু এবং ৩১ জন নারী রয়েছেন। এতে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন। নতুন করে ১৮৯ জন আহত হওয়ায় মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬৪২ জনে।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, চুক্তিতে ছয় সপ্তাহের (৪২ দিন) একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

চুক্তির শর্তানুযায়ী, গাজা উপত্যকা থেকে ধীরে ধীরে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

চুক্তি অনুসারে, প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ রয়েছেন। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরাইলি বন্দির মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহ ফেরত দেওয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করার কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।


সম্পর্কিত নিউজ