ড. ইউনূসের বিমসটেকে বাংলাদেশের স্বপ্ন: ‘৩ শূন্যের’ বিশ্ব গড়তে চায়

ড. ইউনূসের বিমসটেকে বাংলাদেশের স্বপ্ন: ‘৩ শূন্যের’ বিশ্ব গড়তে চায়
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমসটেকের (BIMSTEC) আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্ব গড়ার লক্ষ্য ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ শূন্য দারিদ্র, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নির্গমনের এই তিনটি শূন্যের বিশ্ব গড়তে চায়।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল), থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এই লক্ষ্যগুলো তুলে ধরেন। ড. ইউনূস বিমসটেক অঞ্চলকে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, অনেকে এই জনসংখ্যাকে একটি ‘সমস্যা’ হিসেবে দেখলেও সঠিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে বড় সম্পদে পরিণত হতে পারে।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সবসময় উন্মুক্ত আঞ্চলিক সহযোগিতার পক্ষে। তিনি এমন একটি অঞ্চল গঠনের স্বপ্ন দেখান, যেখানে সব দেশ সমতার ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থ ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও সঠিকভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এই অঞ্চলটি বিশাল সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে।

বিমসটেক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—এই কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য এবং জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত বিমসটেক গ্রিড সংযোগ চুক্তি জ্বালানি খাতে সহযোগিতার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিমসটেক অঞ্চলকে আরও কার্যকর করতে হলে ২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, এই সমস্যার সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ বিষয়ে বিমসটেকের সক্রিয় ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, বিমসটেক প্রায় ২৮ বছর ধরে কাজ করছে। কিন্তু এর প্রকৃত প্রভাব এখনও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যথেষ্ট অনুভূত হয়নি। তিনি বলেন, এই সংগঠনের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করা জরুরি।

শেষ বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, তরুণদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো, জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাগাভাগির মাধ্যমে দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি এবং সরকার ব্যতীত অন্যান্য অংশীদারদের জড়িত করে জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর সম্মিলিত লক্ষ্য হওয়া উচিত।


সম্পর্কিত নিউজ