ঋণের শর্ত শিথিলে আগ্রহী নয় আইএমএফ, অর্থ ছাড়ে অনিশ্চয়তা

ঋণের শর্ত শিথিলে আগ্রহী নয় আইএমএফ, অর্থ ছাড়ে অনিশ্চয়তা
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে প্রাপ্ত ঋণের শর্ত পূরণে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে বাধ্য হবে। এই শর্ত পূরণে অক্ষম বলে শিথিল শর্তের প্রস্তাব দিয়েছে এনবিআর। তবে গতকাল সোমবার আইএমএফের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী বুধবার আবারও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গতকাল সোমবার এনবিআরের চেয়ারম্যানসহ আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অনুবিভাগের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন আইএমএফের সফররত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বৈঠকে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফ চলমান ঋণের শর্ত অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ০.৯ শতাংশ পয়েন্ট বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর ফলে এনবিআরকে অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে।

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে দুই লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। ফলে বাকি তিন মাসে আরও এক লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ‘এটি অসম্ভব।’ এনবিআর এ শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে আইএমএফ তাতে রাজি হয়নি।

আইএমএফের প্রস্তাবনা

আইএমএফ রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • বিলাসী পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো।
  • বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতি বাতিল করা।
  • সব পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা।
  • প্রশাসনিক সংস্কার এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা পৃথক করা।
  • আয়কর বিভাগের ডিজিটাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন।

এনবিআরের সদস্য (আয়করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম বলেন, ‘আমরা গত অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ৭.৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৪ শতাংশ করেছি। আইএমএফ বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা জানে। তবে তারা মনে করে, দেশের সক্ষমতা রয়েছে বাড়তি রাজস্ব আদায় করার। তাই তাদের লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করেনি।’

বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের তিনটি কিস্তিতে প্রায় ২২১ কোটি ডলার পেয়েছে। এখন অন্তর্বর্তী সরকার চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে জুনে ছাড় হওয়ার আশা করছে। তবে শর্ত পূরণ না হলে ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে।

এ প্রেক্ষিতে আইএমএফ ও এনবিআরের মধ্যে সমঝোতা হওয়া জরুরি। অন্যথায় দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও বাড়তে পারে।


সম্পর্কিত নিউজ