মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৬০০, নিখোঁজ আরও শতাধিক

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৬০০, নিখোঁজ আরও শতাধিক
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

প্রতিবেশী মিয়ানমারে গত ২৮ মার্চ আঘাত হানা ভূমিকম্পের পর প্রাণহানির সংখ্যা এখন ৩,৬০০ জনে পৌঁছেছে। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে শতাধিক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধারের কাজ চলছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।

৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের ঐতিহ্যবাহী গির্জা থেকে আধুনিক ভবন পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। এরপর দেশটিতে আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে, যা এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ৫,১৭ জন আহত এবং ১৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

উদ্ধার অভিযানে বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারে যোগ দিয়েছে। চীন, রাশিয়া এবং ভারত সর্বপ্রথম সহায়তা প্রদান করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকেও একটি উদ্ধারকারী দল ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে পৌঁছেছে। তবে সাগাইং অঞ্চলে উদ্ধার অভিযান সামরিক সরকারের অনুমোদন ছাড়া চালানো সম্ভব হচ্ছে না, যা মানবিক প্রচেষ্টাকে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা মিয়ানমার নাউ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “উদ্ধার অভিযান কেবল কায়িক শ্রমের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের জন্য ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক মানুষ অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”

মিয়ানমারের বিপর্যয়ের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহায়তা প্রদানে আগ্রহী হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে দেশটি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ইউএসএইড -এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে পরবর্তীতে ওয়াশিংটন ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর উদ্ধার অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে এমন ধারণা অযৌক্তিক।

সাগাইং অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণে কমপক্ষে ৬৯৩ জন মারা গেছেন বলে জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) জানিয়েছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাব, উদ্ধার অভিযানের ধীরগতি এবং সামরিক সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকায় উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা বলছেন, “অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়ে অসহায়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”

মিয়ানমারের এই বিপর্যয়ের পর আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে বহুগুণ। তবে সরকারি নীতি এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতায় উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল হয়ে উঠছে।


সম্পর্কিত নিউজ