ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ভারত সরকার হঠাৎ করে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার ঘোষণা দেয়ায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে একটি নতুন মোড় আসতে পারে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা এই আশঙ্কায় সম্পূর্ণ একমত নন।
গত ১৫ মাসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভারতীয় রুটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ৩৬টি দেশে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ব্যবহার করে ৪৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে। এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯০০ টনের বেশি।
উল্লেখ্য যে, ভারত সরকার ২০২০ সালের ২৯ জুন তাদের স্থল শুল্ক স্টেশন, বন্দর এবং বিমানবন্দরের মাধ্যমে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রদান করেছিল। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই রুটে রপ্তানি করা হয়েছে ব্লাউজ, ট্রাউজার, টি-শার্ট এবং শিশুদের পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এর মধ্যে প্রধান বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া।
বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, মোট রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ কোটি ৫ লাখ টাকা। এছাড়াও, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত জানতে গেলে, বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি, গত ১৫ মাসে ভারতের মাধ্যমে মোট ৩৬টি ট্রান্সশিপমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে।”
একই সাথে তিনি আরও বলেন, “ভারত বলছে যে, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে তাদের ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল বা ভুটানে পণ্য রপ্তানির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু সম্ভবত ৩৪টি দেশে ভারতের মাধ্যমে শিপমেন্টে আমাদের সমস্যা হতে পারে।”
তিনি আরও মন্তব্য করেন, “এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি দিকই রয়েছে। নেতিবাচক দিকটি হলো, আমাদের পরিবহন খাতে একটি বড় চ্যালেঞ্জ আসতে পারে। অন্যদিকে ইতিবাচক দিকটি হলো, আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এটি একটি সুযোগ হতে পারে। আমাদের পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজস্ব বিকল্প তৈরি করতে হবে।”
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এখন নতুন বিকল্প রুট এবং পদ্ধতি খোঁজার প্রয়োজনীয়তায় মনোযোগী হয়েছে।