মাইগ্রেন—নীরব এক যন্ত্রণা, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
মাথা ব্যথা শুনলেই অনেকেই ভাবেন সাধারণ সমস্যা। কিন্তু মাইগ্রেন নামক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা কেবল সাধারণ ব্যথা নয়—এটি একটি নিউরোলজিক্যাল অসুখ, যা আক্রান্ত ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবন একপ্রকার স্থবির করে তোলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটির বেশি মানুষ মাইগ্রেনে আক্রান্ত। বাংলাদেশেও এই সংখ্যা কয়েক লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। নারীরা এই রোগে পুরুষদের তুলনায় তিন গুণ বেশি আক্রান্ত হন।
✪ কী এই মাইগ্রেন?
মাইগ্রেন হলো এমন একধরনের মাথাব্যথা, যা সাধারণত মাথার এক পাশে হয় এবং সঙ্গে থাকতে পারে বমি ভাব, আলো বা শব্দে অতিসংবেদনশীলতা। অনেকেই ব্যথার আগে চোখে ঝাপসা দেখা, ঝিলমিল আলো দেখা বা অস্পষ্টতা অনুভব করেন—যাকে 'অরা' (Aura) বলা হয়।
✪ কারা বেশি ঝুঁকিতে?
বিশেষজ্ঞরা জানান, যাঁদের পরিবারে কারও মাইগ্রেনের ইতিহাস আছে, তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাছাড়া অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ঘুমের অনিয়ম, নির্দিষ্ট কিছু খাবার (যেমন চকলেট, চিজ, ক্যাফেইন), হরমোন পরিবর্তন (বিশেষ করে মহিলাদের পিরিয়ডের সময়), কিংবা আবহাওয়া পরিবর্তনও মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।
✪ চিকিৎসা ও প্রতিকার
মাইগ্রেনের স্থায়ী চিকিৎসা এখনো পাওয়া যায়নি, তবে কিছু ওষুধ রয়েছে যা ব্যথা কমাতে বা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে ওষুধ ছাড়াও জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনলে মাইগ্রেনের মাত্রা অনেকটাই কমানো সম্ভব।
✪ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
⇨নিয়মিত ঘুম ও খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
⇨পর্যাপ্ত পানি পান
⇨মানসিক চাপ কমানো
⇨আলো ও শব্দ থেকে দূরে থাকা
⇨ট্রিগার খাবার (যা থেকে ব্যথা বাড়ে) এড়িয়ে চলা
⇨চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ গ্রহণ করা
✪ ভবিষ্যতের দিশা:
বাংলাদেশে এখনো অনেকেই মাইগ্রেনকে গুরুত্ব দেন না। ফলে অনেক রোগী চিকিৎসা ছাড়াই বছরের পর বছর ভুগে চলেন। সময় এসেছে এই রোগকে গুরুত্ব দিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর। স্কুল, অফিস ও গণমাধ্যমে এই বিষয়ে আলাদা প্রচার প্রয়োজন।
মাইগ্রেন কেবল মাথাব্যথা নয়—এটি একটি জটিল ও যন্ত্রণাদায়ক অসুখ। সময়মতো সচেতনতা, চিকিৎসা ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সুস্থ জীবনের জন্য এখনই প্রয়োজন জ্ঞান, যত্ন আর যোগ্য পদক্ষেপ।