বাংলাদেশে ক্রমেই বাড়ছে কোরিয়ান ড্রামা ও নেটফ্লিক্স সিরিজের জনপ্রিয়তা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে কোরিয়ান টেলিভিশন সিরিজ তথা 'K-Drama' এবং আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সের কনটেন্টের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের দর্শকদের মধ্যে এই ধরণের সিরিজের প্রতি আগ্রহ চোখে পড়ার মতো।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকেই স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশে কোরিয়ান ড্রামা (K-Drama) ও আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয়তা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে এই ধারার কনটেন্ট এখন দৈনন্দিন বিনোদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক গুগল ট্রেন্ডস বিশ্লেষণে দেখা গেছে, "Marry My Husband", "Queen of Tears", এবং "Doctor Slump"–এর মতো ২০২4 ও ২০২৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কোরিয়ান সিরিজগুলো বাংলাদেশে ব্যাপক সার্চ হয়েছে। পাশাপাশি, নেটফ্লিক্সের '3 Body Problem', 'One Day', ও কোরিয়ান অ্যাকশন থ্রিলার 'Gyeongseong Creature' সিরিজগুলোও বাংলাদেশের টপ ১০ স্ট্রিমিং কনটেন্টে জায়গা করে নিয়েছে।
✪ স্ট্রিমিং ও ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি:
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ (মার্চ ২০২৫) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সাথে পরিচিত।
নেটফ্লিক্স, ডিজনি+, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও, এবং VIU–এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো বাংলাদেশের বাজারে সস্তা সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান চালু করায় দর্শক সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
✪ ভাষা ও সংস্কৃতির সীমা পেরিয়ে:
কোরিয়ান সিরিজগুলোর সংবেদনশীল কনটেন্ট, সামাজিক বার্তা ও স্টাইলিশ প্রেজেন্টেশন দর্শকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জানান, "K-Drama শুধু বিনোদন নয়, আমাদের আবেগ, সম্পর্ক ও জীবনদর্শন নিয়েও ভাবায়।"
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোরিয়ান সংস্কৃতির বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা বা "Hallyu Wave" এখন আর শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি একটি সামাজিক প্রবণতায় রূপ নিচ্ছে। Korea Foundation-এর ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে K-Culture (K-Drama, K-Pop, K-Beauty) ভক্তের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি এবং এই সংখ্যা ২০২৫ সালে আরও বাড়ছে।
✪ স্থানীয় প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া:
বাংলাদেশের প্রোডাকশন হাউস ও কনটেন্ট নির্মাতারা এখন K-Drama স্টাইলের গল্প ও ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল থেকে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। অনেক ইউটিউব ও ওয়েব সিরিজ নির্মাতা এই ধারা অনুসরণ করছেন।
✪ উপসংহার:
২০২৫ সালে এসে এটি স্পষ্ট, K-Drama ও নেটফ্লিক্স সিরিজ এখন আর কেবল শহরকেন্দ্রিক বা তরুণদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ক্রমবর্ধমান সংস্কৃতি, যা বাংলার বিনোদন মানচিত্রে স্থায়ী ছাপ রেখে যাচ্ছে।