মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকী

মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকী
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকী অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার মুক্তির তদবিরে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য ড. ইকবাল জাইদি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ জানিয়েছে, উগ্রবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫২ বছর বয়সী ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে তার নির্দোষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন কারাবন্দী ড. আফিয়া সিদ্দিকী। তার আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড স্মিথ জানান, ড. আফিয়া সিদ্দিকীর পরিবার বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ক্ষমার আবেদন করেছেন। ৭৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি বিশদ আবেদনপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে স্কাই নিউজ জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে স্বাধীনভাবে তথ্য যাচাই করতে পারেনি। বাইডেন ইতোমধ্যে ৩৯ জনকে ক্ষমা করেছেন এবং ৩ হাজার ৯৮৯ জনের সাজা কমিয়েছেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তার হাতে রয়েছে।

আইনজীবী স্মিথ দাবি করেন, গোয়েন্দা সংস্থার ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আফিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, গোয়েন্দারা ভেবেছিলেন, ড. আফিয়া পরমাণু বিজ্ঞানী এবং তেজস্ক্রিয় বোমা তৈরির সঙ্গে জড়িত। এতে তারা ভয় পেয়ে যান এবং তাকে উগ্রবাদীদের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন স্নায়ুবিজ্ঞানী।
প্রসঙ্গত, ড. আফিয়াকে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল জেলা আদালত হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তিনিই প্রথম নারী যিনি যুক্তরাষ্ট্র যার বিরুদ্ধে আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ করেছে কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হননি।
১৮ বছর বয়সে ডা. আফিয়া বোস্টনের ম্যাচাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার ভাই থাকতেন। পরে ব্রান্ডিস ইউনিভার্সিটি থেকে স্নায়ুবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করেন তিনি। কিন্তু ২০০১ সালে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার পর ইসলামিক সংগঠনগুলোকে অনুদান দেওয়ার অভিযোগে তিনি এফবিআইয়ের নজরদারিতে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মতে, ডা. আফিয়া আল-কায়েদায় যোগ দিয়েছিলেন এবং পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার মূল হোতাদের একজন খালিদ শেখ মোহাম্মদের পরিবারে বিয়ে করেন। ড. আফিয়া ২০০৩ সালে পাকিস্তান সফরের সময় অপহরণের শিকার হন। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থা (আইএসআই) তাকে তার তিন সন্তানসহ তুলে নিয়ে যায় এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর হাতে হস্তান্তর করে। পরে তাকে আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে রাখা হয়। পরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হয়। তার দুই সন্তান আহমেদ এবং মরিয়ম যথাক্রমে ২০০৮ এবং ২০১০ সালে মুক্তি পায়। কিন্তু আরেক ছেলে সুলাইমান কোথায় আছেন তা এখনও অজানা।


সম্পর্কিত নিউজ