বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণে জোর তৎপরতা,আসছে কঠোর আইন

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণে জোর তৎপরতা,আসছে কঠোর আইন
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি এখন আর কল্পবিজ্ঞান নয়—বাস্তব জীবনের অঙ্গ। চিকিৎসা, কৃষি, আইন, শিক্ষা থেকে শুরু করে সাইবার নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই AI-এর অগ্রগতি নজরকাড়া। কিন্তু এই প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের উদ্বেগ: গোপনীয়তা লঙ্ঘন, ভুয়া তথ্য তৈরি, চাকরির বাজারে প্রভাব এবং এমনকি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা।

এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন AI প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকর আইনি কাঠামো তৈরির পথে হাঁটছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বহুল আলোচিত EU AI Act চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে। এই আইনটি বিশ্বে প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ AI নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, যেখানে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ AI সিস্টেম, যেমন বায়োমেট্রিক নজরদারি বা স্বয়ংক্রিয় নিয়োগ সফটওয়্যারের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রেও AI নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রেসিডেন্টের একটি নির্বাহী আদেশ জারি হয়েছে, যেখানে AI ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। চীন ইতোমধ্যে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, বিশেষ করে চ্যাটবট এবং অ্যালগরিদম ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

ভারত সরকার গঠন করেছে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি, যারা AI নীতিমালা তৈরি করছে। নীতিমালায় ফোকাস থাকছে 'রেসপনসিবল AI'—অর্থাৎ এমন প্রযুক্তি, যা নৈতিক, নিরাপদ এবং মানবাধিকারসম্মত।

বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ইতোমধ্যে একটি 'AI রোডম্যাপ ২০২৫' তৈরির কাজ শুরু করেছে। এখানে স্থানীয় বাস্তবতা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের উপর প্রভাব, এবং প্রযুক্তির ন্যায্য ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, AI একদিকে যেমন বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে, তেমনি এটিকে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছেড়ে দিলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই এখনই সময়, একটি ভারসাম্যপূর্ণ, মানবকেন্দ্রিক এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নীতিমালা তৈরি করার।


সম্পর্কিত নিউজ