ফেনীতে ৭০ ভাগ নলকূপে পানি নেই, মানুষ জীবন বাঁচাতে খালের পানি খাচ্ছে!

ফেনীতে ৭০ ভাগ নলকূপে পানি নেই, মানুষ জীবন বাঁচাতে খালের পানি খাচ্ছে!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

টানা খরতাপ আর বৃষ্টির অনুপস্থিতিতে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে ফেনী জেলা। জেলার ৬টি উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ নলকূপে পানি উঠছে না, শুকিয়ে গেছে পুকুর-খাল-বিল। মানুষের মুখে এখন একটাই কথা—“পানি নেই, জীবন নেই।”

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার প্রায় দুই লক্ষাধিক নলকূপের মধ্যে অধিকাংশ এখন অকেজো। চালু থাকা নলকূপগুলোর অনেকগুলোতেও পানি উঠছে না। সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে ফুলগাজী, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার মানুষ।

শরীফপুর গ্রামের কাজী বাড়িতে ১১টি পরিবার বসবাস করে। সবার নিজস্ব টিউবওয়েল থাকলেও একটিতেও পানি নেই। খালের পানি ফুটিয়ে কিংবা ছেঁকে খাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। রান্না-বান্নার পানিও আসে দূরের জলাশয় থেকে।

৭০ বছর বয়সী হাজেরা খাতুন বলেন, “প্রতিদিন আধা কিলোমিটার হাঁটতে হয় শুধু একটু পানি আনতে। নামাজের অজুর জন্য খালের দিকে দৌড়াতে হয়। এমন কষ্ট জীবনে বহুবার করেছি, কিন্তু এবার সবচেয়ে ভয়াবহ।”

কৃষকরাও পড়েছেন মহাবিপদে। কাজিরবাগের কৃষক দিদারুল আলম জানান, “ধানগাছের থোড় শুকিয়ে গেছে। জমিতে সেচ দিতে পারছি না। সরকার যদি এখনই সহায়তা না করে, তাহলে আমাদের ফসলের ভবিষ্যৎ নেই।”

এদিকে অনেক এলাকায় টিউবওয়েলের অভাবে মানুষ পুকুরের পানি খাচ্ছে, যা ডায়রিয়া ও চর্মরোগসহ নানা সমস্যার কারণ হচ্ছে।

ফেনী পরিবেশ ক্লাবের সভাপতি নজরুল বিন মাহমুদুল বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পানির স্তর এতটাই নিচে নেমে গেছে যে গভীর নলকূপেও পানি নেই। বিষয়টি ভয়াবহ এবং দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি বড় দুর্যোগে রূপ নিতে পারে।”

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিউল হক জানান, “বিকল্প পানির উৎস খুঁজে বের করা এবং গভীরতর নলকূপ বসানোসহ দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।”


সম্পর্কিত নিউজ