বাংলাদেশ যেন আশির দশকের দক্ষিণ কোরিয়া

বাংলাদেশ যেন আশির দশকের দক্ষিণ কোরিয়া
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়ী জিওর্দানো কোরিয়ার চেয়ারম্যান জুনসেওক হান সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে দেশটির অর্থনৈতিক প্রগতিকে আশির দশকের দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন পর্বের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার মতে, বাংলাদেশ বর্তমানে সেই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে যখন দক্ষিণ কোরিয়া কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছিল।

হান তার সাক্ষাত্কারে উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশের তরুণ ও দক্ষ শ্রমশক্তি, প্রতিযোগিতামূলক মজুরি হার এবং ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন আমাকে ৩০-৪০ বছর আগের কোরিয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।" তিনি বিশেষভাবে পোশাক শিল্প, ইলেকট্রনিক্স অ্যাসেম্বলিং এবং হালকা অটোমোটিভ খাতের উন্নয়নের বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

তবে হান বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন। তার মতে, পরিবহন ও লজিস্টিক খাতের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এবং বন্দর সুবিধার উন্নয়ন এখন জরুরি। "রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং পণ্য সরবরাহের সময় কমিয়ে আনতে পারলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে," বলেন তিনি।

জিওর্দানো কোরিয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে বছরে ৫-১০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করছে। হান জানান, আগামী পাঁচ বছরে এই পরিমাণ তিনগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে উৎপাদন ইউনিট স্থাপনেরও ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ার প্রবণতা সম্পর্কে হান বলেন, "হুন্দাই, স্যামসাং, এলজির মতো কোরিয়ান কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে বাংলাদেশে সফলভাবে কাজ করছে। আরও ২৭টি কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাই করছে।"

বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের দূরদর্শিতার প্রশংসা করে হান মন্তব্য করেন, "দেশটির নেতৃত্ব বৈশ্বিক ব্যবসার প্রবণতা সম্পর্কে সচেতন। তাদের এই দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই এশিয়ার নতুন অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।" তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখলে কেবলমাত্র বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে পারবে।


সম্পর্কিত নিউজ