ই-কমার্সের আড়ালে অর্থপাচার: ৮ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৭০০ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের আড়ালে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাচারের ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেশের আটটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে 'আনন্দের বাজার' ৩০০ কোটি, 'ই-অরেঞ্জ' ২৩২ কোটি এবং 'ধামাকা' ১১৬ কোটি টাকা পাচারের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের দ্রুত সম্প্রসারণের পাশাপাশি অবৈধ কার্যক্রমও বাড়ছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফেসবুক পেজ বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মাত্র ০.৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে নিবন্ধিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ই-কমার্স খাতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১১২ কোটি টাকা, যা ২০২০ সালের তুলনায় চার গুণ বেশি।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ গ্রহণের পর নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করছে অথবা কোনো পণ্যই দিচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া রিভিউ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন অনিয়ম চোখে পড়ছে।
ইতিমধ্যে ইভ্যালি, কিউকমের মতো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল বাণিজ্য খাতকে সুশৃঙ্খল করতে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন এবং কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। পুলিশের প্রতিবেদনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বাধ্যতামূলক নিবন্ধন, এসক্রো সার্ভিস চালু এবং অর্থ পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, ডিজিটাল বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে অবৈধ কার্যক্রম দমন এবং ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারি নীতিনির্ধারকদের এখনই এই খাতে কঠোর নজরদারি ও আইনি কাঠামো শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মত দিচ্ছেন তারা।