"শেষ ছবি ছিল একটি হাসি"—কানের চলচ্চিত্রে থাকা গাজা সাংবাদিক ফাতিমা নিহত, ঝড় তুলছে বিশ্বজুড়ে

"শেষ ছবি ছিল একটি হাসি"—কানের চলচ্চিত্রে থাকা গাজা সাংবাদিক ফাতিমা নিহত, ঝড় তুলছে বিশ্বজুড়ে
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ফাতিমা হাসুনা নিহত হয়েছেন ১৬ এপ্রিল, বুধবার — গাজা সিটির আল-নাফাক স্ট্রিটে তাঁদের পারিবারিক বাসভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায়। কান - এর লাল গালিচায় পা রাখার স্বপ্ন নিয়ে মাত্র একদিন আগেও হাসিমুখে ছিলেন ফাতিমা হাসুনা। আজ সেই মুখ ছবি হয়ে রয়ে গেছে—কারণ ফাতিমা আর নেই।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ফাতিমা, যুদ্ধের বর্ণনায় নিবেদিতপ্রাণ এই চিত্রসাংবাদিক। সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর পরিবারের আরও সাতজন।

দুই বছর ধরে ফাতিমা ছিলেন যুদ্ধের এক নীরব কণ্ঠ। গাজা শহরের প্রতিদিনের জীবন, ধ্বংসস্তূপের ভেতরে মানুষের অস্তিত্ব—তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়ত নির্মোহভাবে।

"যদি মৃত্যু আসে, আসুক তা যেন গর্জে ওঠা মৃত্যু হয়ে," — গত আগস্টে নিজের ইনস্টাগ্রামে এমনই লিখেছিলেন ফাতিমা। আজ, সেই লেখাই যেন তাঁর মৃত্যুর প্রতিধ্বনি হয়ে উঠেছে।

তাঁর জীবন এবং কাজ ছিল ইরানি পরিচালক সেপিদেহ ফারসির ডকুমেন্টারির মূল উপজীব্য। ছবিটির নাম—Put Your Soul On Your Hand And Walk। নির্বাচিত হয়েছে ২০২৫-এর কান চলচ্চিত্র উৎসবের ACID বিভাগে।

পরিচালক জানান, মৃত্যুর আগের দিনই ফাতিমাকে ছবিটির নির্বাচনের খবর দেন। দু'জনে মিলে ফ্রান্স সফরের কথা বলছিলেন। "ও বলেছিল, এটা ওর জীবনের সবচেয়ে আনন্দের খবর। আজ সেটা স্মৃতি," বলেন তিনি।

হামলা সম্পর্কে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, লক্ষ্য ছিল "হামাসের এক সন্ত্রাসী।" কিন্তু ফাতিমার প্রতিবেশীরা বলছেন—এই পরিবার কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিল না।

প্যালেস্টিনিয়ান জার্নালিস্ট প্রোটেকশন সেন্টার নিহত সাংবাদিকের এই মৃত্যুকে আন্তর্জাতিক অপরাধ বলে আখ্যা দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হামলায় ফাতিমার বাবা-মা গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউ-তে আছেন।

ফাতিমার ফেসবুক ফলোয়ার ৩৫ হাজারেরও বেশি। তাঁর শেষ পোস্ট ছিল সমুদ্রের ধারে জেলেদের ছবি, পাশে লেখা:
"এই শহরে ঢোকার পথ আছে, বেরোনোর নয়।"

আজ তাঁর ছবি আর গল্প হয়ে উঠছে বিশ্বের প্রতিবাদের ভাষা। চলচ্চিত্রের পর্দা এবার তাঁর গল্প বলবে—না ফেরার দেশে যাওয়া এক সাংবাদিকের, যিনি ক্যামেরায় বেঁধেছিলেন গাজার হৃদয়।


সম্পর্কিত নিউজ