মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য, সচেতনতা ও সহায়তার প্রয়োজনীয়তা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আধুনিক সময়ে নারীশক্তির অগ্রগতি যেমন চোখে পড়ার মতো, ঠিক তেমনি তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটও ক্রমেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। প্রতিদিনের চাপ, বৈষম্য, সামাজিক প্রত্যাশা এবং নিরাপত্তার অভাব — মেয়েদের মানসিক ভারসাম্যে বড় প্রভাব ফেলছে। অথচ এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা আজও অনেকাংশে অনুপস্থিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এখনো শহরকেন্দ্রিক এবং সীমিত। গ্রামগঞ্জের মেয়েদের জন্য এই সহায়তা প্রায় অগম্য। নানা ধরনের মানসিক চাপের মাঝে থেকেও বহু নারী মুখ খুলতে সাহস পান না, যেন নিজেদের যন্ত্রণাকেও লুকিয়ে রাখাই তাঁদের স্বাভাবিক নিয়তি।
ঢাকার মনোরোগ চিকিৎসক ডা. লিজা রহমান জানালেন, "নারীরা প্রায়শই দায়িত্বের ভারে নিজেকে বিসর্জন দেন। পরিবার, সমাজ, কর্মক্ষেত্রের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে নিজেদের অনুভূতিকে চেপে রাখেন, যা শেষ পর্যন্ত গভীর মানসিক সংকট তৈরি করে।"
সচেতনতার অভাব, কুসংস্কার এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে 'লজ্জার বিষয়' মনে করার প্রবণতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। তবে আশার কথা, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু তরুণ সংগঠন এবং সামাজিক উদ্যোগ নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলাপ শুরু করেছে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য কর্মশালা, অনলাইন কাউন্সেলিং, হেল্পলাইন চালুর মত কার্যক্রম নতুন প্রজন্মকে সাহস জোগাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময় এসেছে মানসিক স্বাস্থ্যকে শরীরের স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ মনে করার। মেয়েদের কথা শুনতে হবে, তাঁদের অনুভূতির মর্যাদা দিতে হবে। পরিবার, বন্ধু, প্রতিষ্ঠান — সবাই মিলে গড়ে তুলতে হবে সহানুভূতির এক বন্ধন, যেখানে মানসিক কষ্ট কোনো লজ্জার বিষয় নয়, বরং খোলামেলা আলোচনার একটি স্বাভাবিক অংশ।