শিশুর পুষ্টিতে কোয়েল ডিম, ছোট ডিম, বড় উপকার

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আজকাল শহর থেকে গ্রাম—সর্বত্রই অভিভাবকদের মাঝে এক নতুন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে: কোয়েল পাখির ডিম। ছোট আকৃতির হলেও পুষ্টিগুণে ঠাসা এই ডিমটি শিশুদের জন্য হয়ে উঠছে আদর্শ খাবার। চিকিৎসা ও পুষ্টি বিজ্ঞান বলছে—শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোয়েল ডিম হতে পারে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক সমাধান।
✪ কী আছে কোয়েল ডিমে?
বহু গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়েল ডিমে রয়েছে—
১। উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন A, B1, B2, B12 ও E,
২। মিনারেলস: আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস ও সেলেনিয়াম, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড— যা শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মুরগির ডিমের তুলনায় কোয়েল ডিমে ৬ গুণ বেশি ভিটামিন বি১, ১৫ গুণ বেশি ভিটামিন বি২ এবং ৫ গুণ বেশি আয়রন থাকে। এটি শিশুদের জন্য একেবারেই 'পাওয়ার প্যাকড ফুড'।
✪ শিশুকে কেন কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াবেন???
১। শিশুর দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
২। শিশুর র'ক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
৩। বাচ্চাদের ব্রেনকে বিকশিত করে
✪ শিশুর রোগ প্রতিরোধে সহায়ক -
কোয়েল ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শিশুর শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে ঠান্ডা, কাশি, অ্যালার্জি এমনকি অ্যাজমার প্রবণতাও কমে যেতে পারে।
✪ অ্যালার্জির ঝুঁকি কম -
অনেক শিশু মুরগির ডিমে অ্যালার্জি দেখালেও, কোয়েল ডিম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি নিরাপদ। এতে থাকা বিশেষ প্রোটিন উপাদান অ্যালার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
✪ কবে এবং কীভাবে খাওয়াবেন?
⇨ ১ বছর বয়স পার হওয়ার পর শিশুকে কোয়েল ডিম খাওয়ানো যেতে পারে।
⇨ প্রথমে সিদ্ধ ডিমের কুসুম দিয়ে শুরু করুন।
⇨ একটু বড় হলে সিদ্ধ কোয়েল ডিম ভর্তা করে বা খিচুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন।
⇨ দিনে ১টি ডিমই যথেষ্ট।
✪ চিকিৎসক কী বলছেন?
ডা. সাবিহা রহমান, পুষ্টিবিদ ও শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ জানান:
"শিশুর বুদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি এবং হাড়ের গঠনে কোয়েল ডিম দারুণভাবে কাজ করে। এটি একটি পরিপূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য।"
✪ কিছু সতর্কতা-
⇨ অবশ্যই ভালভাবে সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে।
⇨প্রথমবার খাওয়ানোর পর শিশুর শরীরে কোনো অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
⇨সংরক্ষিত বা অতিরিক্ত পুরনো ডিম খাওয়ানো উচিত নয়।
ছোট হলেও কোয়েল ডিম শিশুদের পুষ্টির জন্য এক অনন্য সম্পদ। প্রতিদিন একটিমাত্র ডিমে শিশু পেতে পারে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক উপাদান।
সন্তানের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য আজ থেকেই এই ছোট ডিমটিকে অন্তর্ভুক্ত করুন তার খাদ্যতালিকায়।