শুধু পেট নয়-সুগার, কোলেস্টেরল, এমনকি হৃদরোগও থাকে নিয়ন্ত্রণে! নিয়মিত এক চামচ পেটে গেলেই বশে থাকবে আপনার স্বাস্থ্যচিত্র!

শুধু পেট নয়-সুগার, কোলেস্টেরল, এমনকি হৃদরোগও থাকে নিয়ন্ত্রণে! নিয়মিত এক চামচ পেটে গেলেই বশে থাকবে আপনার স্বাস্থ্যচিত্র!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

বর্তমান জীবনে অনিয়মিত খাওয়া, স্ট্রেস, দেহে আঁশের অভাব-সব মিলিয়ে পেটের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। কিন্তু আপনি কি জানেন, সেই পরিচিত ইসবগুলের ভুসি (Psyllium Husk) শুধু পেট পরিষ্কারের জন্যই নয়-রক্তের সুগার, কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে অত্যন্ত কার্যকর? এই সহজলভ্য উপাদানটিকে শুধু 'ল্যাক্সেটিভ' ভাবলে ভুল করবেন। আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞান এখন ইসবগুলকে বলছে "মেটাবলিক স্বাস্থ্য রক্ষার গোপন সেনা"। চলুন জেনে নিই ইসবগুল কীভাবে আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে-

ইসবগুলের ভুসি কী?

ইসবগুল (Plantago ovata) গাছের বীজের খোসা থেকে তৈরি হয় ইসবগুলের ভুসি। এটি পানি শোষণ করে জেলি জাতীয় আকার নেয় ও অন্ত্রে একধরনের 'ফাইবার জেল' তৈরি করে, যা পাচনতন্ত্র ও রক্তপ্রবাহে বহুমুখী উপকার করে।
 

ইসবগুল যেভাবে কাজ করে শরীরে-

১. পেট পরিষ্কার ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:

⇒ পানি শোষণ করে মলকে নরম ও আকারে বড় করে দেয়, ফলে সহজে বেরিয়ে যায়। 

⇒ অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক রাখে, দূর করে গ্যাস ও ব্লটিং। 
 

২. সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে (ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী):

⇒ গ্লুকোজ শোষণের গতি ধীর করে, ফলে ইনসুলিন স্পাইক কম হয়। 

⇒ খাবারের পর রক্তে সুগার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। 

গবেষণা বলছে: দিনে ৫-১০ গ্রাম ইসবগুল রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১০-১৫% পর্যন্ত কমাতে পারে
 

৩. LDL কোলেস্টেরল কমায়-হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস: 

⇒ ইসবগুল অন্ত্রে যকৃতে তৈরি হওয়া পিত্ত (bile acid) বেঁধে রাখে, ফলে যকৃৎ রক্ত থেকে আরও কোলেস্টেরল টেনে নেয়, এতে LDL কমে। 

⇒ এটি ব্লাড প্রেসারও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। 

একাধিক স্টাডি প্রমাণ করেছে: প্রতিদিন ইসবগুল গ্রহণে ৬-৭% পর্যন্ত খারাপ কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব। 
 

৪. ওজন কমাতেও সহায়ক: 

⇒ খেলে পেট ভরা লাগে, খিদে কমে। 

⇒ ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে, অতিরিক্ত খাওয়া কম হয়। 
 

যেভাবে খাবেন ইসবগুল-

১ চা চামচ ইসবগুল + ১ গ্লাস হালকা গরম পানি / দুধ
– খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে অথবা ঘুমের আগে
– ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চাইলে প্রতিদিন ১–২ বার
– পানি ছাড়া কখনো খাবেন না, না হলে পেট শক্ত হয়ে যেতে পারে


সতর্কতা:

⇨ বেশি মাত্রায় খেলে গ্যাস, ফুলাভাব হতে পারে

পর্যাপ্ত পানি না খেলে হজমে সমস্যা।

⇨কোনো ওষুধের সাথে একসাথে খাবেন না (অন্তত ১ ঘণ্টা বিরতি রাখুন)।

⇨ দীর্ঘমেয়াদে খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন—বিশেষ করে ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ থাকলে।

 

ইসবগুল এককথায় প্রকৃতির দেওয়া এক অলৌকিক উপহার, যার উপকারিতা শুধু পেটেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি এমন এক 'মাল্টিফাংশনাল ফাইবার' যা শরীরের বহু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধানে কার্যকর। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও আজ ইসবগুলকে স্বীকৃতি দিচ্ছে একটি "মেটাবলিক হেল্পার" হিসেবে।
 

নিয়মিত মাত্রায় গ্রহণ করলেই আপনি পেতে পারেন-
 

✔ পরিষ্কার অন্ত্র

✔ নিয়ন্ত্রিত সুগার

✔  কম কোলেস্টেরল

✔ ভালো হজম এবং 

✔ হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ